জিয়াংসুতে নবীন শিক্ষার্থীদের অভ্যর্থনায় আয়োজন হলো বর্ণাঢ্য উৎসব
চীনের জিয়াংসু প্রদেশে অধ্যয়নরত নতুন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য জিয়াংসু ইন্টারন্যাশনাল কালচারাল এক্সচেঞ্জ সেন্টারের আয়োজনে এক বর্ণাঢ্য নবীনবরণ ও অভ্যর্থনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫) বিকালে নানজিং শহরের অন্যতম দর্শনীয় স্থান সুয়ান উ লেক পার্কে এ আয়োজন সম্পন্ন হয়। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ, রাশিয়া, থাইল্যান্ড, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া, মরক্কোসহ ১০টিরও বেশি দেশের প্রায় দুই শতাধিক আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।
চীনে প্রতিবছর সেপ্টেম্বর মাসে নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হয়। বিশেষ করে জিয়াংসু প্রদেশ শিক্ষার মান, আধুনিক গবেষণাগার, প্রযুক্তি-সমৃদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয় এবং আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশের জন্য বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেছে। এখানকার অনেক বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্ব র্যাংকিংয়ে জায়গা করে নিয়েছে এবং প্রকৌশল, চিকিৎসা, ব্যবসায় শিক্ষা, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, পরিবেশবিদ্যা ও মানবিক বিজ্ঞানের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে মানসম্মত শিক্ষা প্রদান করছে। ফলে প্রতিবছর হাজারো বিদেশি শিক্ষার্থী জিয়াংসুতে এসে পড়াশোনার পাশাপাশি ভিন্ন সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে।
অনুষ্ঠানটির সার্বিক পরিচালনায় ও সঞ্চালনায় ছিলেন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী আহনাফ ও সঞ্চালনায় তাঁকে সহযোগিতা করেছেন লিনা। অনুষ্ঠানে নানজিং গভর্নমেন্ট ও জিয়াংসু ইন্টারন্যাশনাল কালচারাল এক্সচেঞ্জ সেন্টারের বিশেষ প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন। অতিথিরা নতুন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন। তাঁরা শিক্ষার্থীদের আন্তরিকভাবে স্বাগত জানিয়ে বলেন, “জিয়াংসু শুধু শিক্ষা নয়, বরং সংস্কৃতি ও বন্ধুত্বেরও একটি মিলনমেলা। আশা করি, তোমরা এখানে পড়াশোনার পাশাপাশি মানবিক মূল্যবোধ, সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মানসিকতা গড়ে তুলবে।” পাশাপাশি, পুরোনো শিক্ষার্থীরাও নবীনদের পড়াশোনা, আবাসন ও দৈনন্দিন জীবনের নানা বিষয় নিয়ে মূল্যবান পরামর্শ প্রদান করেন।
প্রথম পর্ব শেষে আয়োজকরা শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিভিন্ন আউটডোর খেলাধুলার আয়োজন করেন। এতে অংশ নিয়ে শিক্ষার্থীরা উচ্ছ্বাসের সঙ্গে খেলাধুলায় মেতে ওঠেন। দ্বিতীয় পর্বে পরিবেশিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীরা গান, নাচ, অভিনয়সহ নানা পরিবেশনা উপস্থাপন করেন, যা উপস্থিত সবাইকে মুগ্ধ করে। বাংলাদেশি শিক্ষার্থী জিসান তার অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, “আজকের এই আয়োজন সত্যিই স্মরণীয়। এখানে এসে আমি শুধু নতুন বন্ধু পাইনি, বরং বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতি কাছ থেকে জানার ও দেখার সুযোগও পেয়েছি। আশা করি, এই পরিবেশ আমাদের সবাইকে পড়াশোনায় উৎসাহ দেবে এবং পারস্পরিক বন্ধুত্ব আরও দৃঢ় করবে।” উৎসবমুখর এ আয়োজনকে শিক্ষার্থীরা এক আনন্দঘন অভিজ্ঞতা হিসেবে দেখছেন। তাদের মতে, এই ধরনের উদ্যোগ নতুনদের শুধু স্বাগতই জানায় না, বরং বহুজাতিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময় ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
Arif/Raoha
BCYSA.ORG এর নিউজ-এ আপনিও লিখতে পারেন। গণচীনে প্রবাস জীবনে আপনার অভিজ্ঞতা, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের খবরাখবর, আনন্দ-বেদনার গল্প, স্মৃতিচারণ, ভ্রমণ, অনুভূতি, বিশেষ অনুষ্ঠানের প্রতিবেদন, চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর ছবিসহ আমাদের (বাংলা অথবা ইংরেজিতে) পাঠাতে পারেন। লেখা পাঠানোর ইমেইল : [email protected]।