বাংলাদেশ চীন বন্ধুত্বের প্রেক্ষাপটঃ বিজয়ের ৫০ বছরে ফিরে দেখা
চীনদেশ।
ঠিক কবে যে দেশটির সঙ্গে আমার পরিচয় তা হলফ করে বলা মুশকিল। আমাদের ছেলেবেলা জুড়ে ছিল
মজার মজার সব চীনা বই। চীনের বিদেশী ভাষা প্রকাশনালয়ের ছাপা শিশুতোষ বইগুলো তখন ঢাকায়
দেদারসে পাওয়া যেত। আমরা চাচা চৌধুরী, নন্টে-ফন্টের সঙ্গে ওসব বইয়েরও বেশ সমঝদার ছিলাম।
মোটা চীনে কাগজের বই, ভেতরে সুন্দর গন্ধ আর পেল্লায় পেল্লায় সব ছবি। চীনের শিশুরা কাপড়ের
জুতো পায়ে দিয়ে এটা করে, ওটা করে, সবার গালে কেমন যেন মায়াময় গোলাপি গোলাপি আভা। দেখতাম
আর ভাবতাম; আহা, দেবশিশু বুঝি একেই বলে! সেই দেবশিশুদের দেশ চীন, আমাদের খুবই কাছের
বন্ধুরাষ্ট্র। দুদেশের মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্কটি যদিও ১৯৭৬ সালের জানুয়ারি মাসে স্থাপিত
তথাপি চীনের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক কয়েকদিনের বা কয়েক যুগের কিংবা কয়েক শতাব্দীরও
নয়। এই সম্পর্ক , এই বন্ধুত্ব বহু শতাব্দী প্রাচীন। হাজার বছরের আস্থার ইটে তৈরি এই
সম্পর্কের মজবুত “গ্রেট ওয়াল ”।
খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতকে চীনের মহাপরাক্রমশালী হান সম্রাট ঊ এর আমলে তাঁর রাজদূত চাং ছিয়েন সর্বপ্রথম সিন্ধু অববাহিকার ভারতীয় সভ্যতার বিস্তারিত বিবরণ প্রকাশ করেন বলে চীনা ঐতিহাসিক সি মা ছিয়েনের বিবরণীতে জানা যায়। রাজদূত চাং ছিয়েন ব্যাকট্রিয়া অঞ্চলের দক্ষিণ পূর্বে ‘শেন তু” নামক একটি উর্বর মহাজনপদের বিষয়ে উল্লেখ করেন এবং পরবর্তীতে চীনের সিছোয়ান প্রদেশ হয়ে সেই ‘শেন তু’ এর “মো জিয়ে থোও” নামক মহাজনপদে যাবার জন্য বহুবার চেষ্টা করেন। একটু খেয়াল করলেই বোঝা যাবে ‘শেন তু’ এবং “মো জিয়ে থো” বলতে প্রাচীন সিন্ধু (‘শেন তু’) সভ্যতার অন্তর্গত মগধকেই (“মো জিয়ে থোও”) বোঝানো হয়েছে। এই চাং ছিয়েনকে প্রাচীন রেশম পথের উদ্ভাবক হিসেবে এখনও চীনে পরম শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করা হয়। বৌদ্ধ ধর্মের আকর গ্রন্থ মহাবস্তু মতে প্রাচীন ভারতে মগধসহ এরকম আরও ষোলটি মহাজনপদের উল্লেখ পাওয়া যায়।
BCYSA.ORG এর নিউজ-এ আপনিও লিখতে পারেন। গণচীনে প্রবাস জীবনে আপনার অভিজ্ঞতা, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের খবরাখবর, আনন্দ-বেদনার গল্প, স্মৃতিচারণ, ভ্রমণ, অনুভূতি, বিশেষ অনুষ্ঠানের প্রতিবেদন, চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর ছবিসহ আমাদের (বাংলা অথবা ইংরেজিতে) পাঠাতে পারেন। লেখা পাঠানোর ইমেইল : [email protected]।