বিকেল পাঁচটা
লেকের পাড়ের বেঞ্চে বসে আছে নীলা, একবারে মৃতপ্রায় মানুষের মতো লাগছে তাকে। এই পড়ন্ত বিকেলে মৃদুমন্দ বাতাস বইছে, নারিকেলের পাতা গুলো মাথার উপর তিরতির করে হাওয়ার শব্দ দিচ্ছে। সামনের মাঠে একদল ছেলে ব্যাডমিন্টন খেলছে। অদূরে কয়েক জোড়া কাপল একজন একজনের কাঁধের উপর পরম নিশ্চিতে মাথা রেখে সোহাগী ভঙ্গিতে হাতে হাত রেখে কথা বলে যাচ্ছে। এই মুহূর্তে পৃথিবীর কোথায় কি হচ্ছে, কে কি বলছে, তার কোন খেয়াল নেই। মাঠের এককোনায় এক ছেলে গিটার বাঁজিয়ে গান করছে, তাকে ঘিরে ছেলে-মেয়েরা বসে মন দিয়ে শুনছে।
আসলে নীলা একটা ইউনিভার্সিটির সুন্দর সুশীতল নীল পানির লেকের পাড়ে বসে আছে, সামনে খোলা মাঠ তার ঐ পাশে ছেলেদের আবাসিক হল যেটা সে পরে জানতে পেরেছিল। হাজার হাজার ছেলেমেয়ের আনাগোনা এই পড়ন্ত বিকেলে। এত সুন্দর মনোমুগ্ধকর পরিবেশেও নীলার গাঁ দিয়ে দরদর করে ঘাম ঝরছে কেন সে বুঝতে পারছে না। হাত-পা গুলো এখনও ঠকঠক করে কাঁপছে। মাথাটা ভোঁ ভোঁ করে ঘুরছে। হঠাৎ করে একজনের ডাকে সম্মতি ফিরে পেল। আসলে উনি এক স্কুলের বড় ভাইয়ের মামা। তার সঙ্গে এসেছে। হঠাৎ করে নীলার মনে হল সে আসলে সারাদিন কিছু খায়নি, মামা নামের সেই লোকটাও কিছু খায় নাই।
আসলে গল্পটা এখন থেকে দশ বছর আগের, দিনটা ছিল নীলার নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রথম দিন।এই বার মূল গল্পে আসা যাক। এক গরীব বাবার মেয়ে নীলা, অজপাড়াগাঁয়ে থেকে উঠে আসা। চেহারা বলতে তেমন বলার মত কিছু নাই, যেটা আছে সেটা কারও চোখে পড়ার মত কিছু বলে নীলা মনে করে না। ঐ সে লাভ এ্যট ফার্স্ট সাইট মানে প্রথম দেখাতেই প্রেম এমন কোন চেহারা আছে বলে নীলার কোন দিন মনে হয়নি। তবে এতকিছুর পরও নীলার একটা নামডাক আছে এলাকাতে, সবাই তাকে এক নামেই চিনে। কারণ নীলার মত মেধাবী ছাত্রী ঐ তল্লাটে সে সময় আর কেউ ছিল না। নীলাকে সবাই খুব ভালবাসতো,কারণ মানুষ হিসাবে নীলা বেশ ভাল মনের অধিকারী।
BCYSA.ORG এর নিউজ-এ আপনিও লিখতে পারেন। গণচীনে প্রবাস জীবনে আপনার অভিজ্ঞতা, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের খবরাখবর, আনন্দ-বেদনার গল্প, স্মৃতিচারণ, ভ্রমণ, অনুভূতি, বিশেষ অনুষ্ঠানের প্রতিবেদন, চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর ছবিসহ আমাদের (বাংলা অথবা ইংরেজিতে) পাঠাতে পারেন। লেখা পাঠানোর ইমেইল : [email protected]।